ক্যান্সার সম্পর্কিত কিছু বিস্তারিত তথ্য – যা আপনার জানা একান্ত জরুরী
প্রথমেই জানা যাক ক্যান্সার কি?
ক্যান্সারঃ ক্যান্সার বা কর্কটরোগ হল অনিয়ন্ত্রিত কোষ বিভাজন সংক্রান্ত রোগসমূহের সমষ্টি। এখনও পর্যন্ত এই রোগের মৃত্যুর হার অনেক বেশি। কারণ প্রাথমিক অবস্থায় ক্যান্সার রোগ সহজে ধরা পরে না, ফলে দেখা যায় শেষ পর্যন্ত গিয়ে ভালো কোনও চিকিৎসা দেয়াও সম্ভব হয় না।
ক্যান্সারের কারণঃ
ঠিক কি কারণে ক্যান্সার হয় সেটা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে সাধারণ কিছু কারণ খুঁজে পাওয়া গেছে।
ক্যান্সারের সাধারণ লক্ষণঃ
গোড়াতেই যদি চিহ্নিত করা যায় তাহলে অনেক দুরারোগ্য রোগের হাত থেকেই নিস্তার মেলে। কিন্তু আমরা তো সেগুলোকে মোটেই পাত্তা দিয়ে থাকি না! উল্টো করে যদি বলি, ‘শরীর থাকলে শরীরে একটু-আধটু আধি-ব্যাধি থাকবেই’। এরকম ভাবেই ক্যান্সারের একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ের অনেক গুলোই লক্ষণ আছে। অবহেলা না করে যদি আপনি একটু নজর দিলেই এই কঠিন দুরারজ্ঞ ব্যাধি থেকে রেহাই পেতে পারেন।
১। খুব ক্লান্ত বোধ করা
২। ক্ষুধা কমে যাওয়া
৩। অস্বাভাবিক রক্তপাত হওয়া
৪।শরীরের যে কোনজায়গায় চাকা বা দলা দেখা দেয়া
লিভার ক্যান্সার কেন হয় ?
১) ক্রনিক হেপাটাইসিসঃ ভাইরাল হেপাটাইসিস লিভার কান্সারের সাথে সম্পর্কিত । প্রায় ৩০% ক্যান্সার রোগীর ক্ষেত্রে দেখা যায় যে তাদের এর আগে ক্রনিক হেপাটাইসিস ছিল এর মধ্যে হেপাটাইসিস বি সবচেয়ে কমন।
২) সিরোসিসঃ প্রায় ৫০%-৯০% ক্ষেত্রেই দেখা যায় লিভার কান্সারের রোগী সিরোসিস এ ভুগে থাকেন। সুতরাং ক্যান্সার প্রতিরোধ করার জন্য লিভার সিরোসিস এর রোগীদের নিয়মিত হাসপাতালে চেক-আপ করাতে হবে।
signs-of-lung-cancer-in-women
ফুসফুস ক্যান্সারের কারণগুলো নিন্মে দেয়া হলঃ
১। ধূমপান ফুসফুস ক্যান্সারের প্রধান কারণ। ১৯৫০ সাল থেকে অসংখ্য গবেষণায় প্রাপ্ত, এটি একটি প্রতিষ্ঠিত সত্য। ২। ফুসফুস ক্যান্সারের ৯০ শতাংশ কারণ প্রত্যক্ষ ধূমপান
৩। যিনি দিনে এক প্যাকেট সিগারেটের ধূম পান করেন, তাঁর ফুসফুস ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি অধূমপায়ীর চেয়ে ২৫-৩০ গুণ বেশি। ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর ৯০ শতাংশ ধূমপায়ী। তবে সব ধূমপায়ীই ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হন না। প্রতি ১০ জন ধূমপায়ীর মধ্যে চারজনের ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
স্তন ক্যান্সার
নিয়মিত স্তন পরীক্ষা করা কিংবা প্রতি এক অথবা দুই বছর অন্তর ম্যামোগ্রাম(স্তনের এক্সরে ছবি) করিয়ে আপনি সম্ভবত ভাবছেন, স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে আপনি যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করছেন। সমস্যা হলো স্তনে চাকা কিংবা মাংসপিন্ডের উপস্থিতি সনাক্ত করার কথা শুনতে যতটা সহজ মনে হয় বাস্তবে এটা সনাক্ত করা ততটা সহজ নয়।
স্তন ক্যান্সারের সতর্কতাসূচক লক্ষণ
১। স্তন কিংবা বুকে ব্যথাঃ স্তন কিংবা বুকে ব্যথা, ধড়ফড় করা, টনটন করা অথবা ধারালো ছুরির আঘাতের মতো ব্যথা কিংবা অস্বস্তি কোন ভালো লক্ষণ নয়। ব্রেস্ট ক্যান্সার থেকে বেঁচে যাওয়া এক রোগী ডাক্তারের কাছে বর্ণনা করেন, তীব্র ব্যথা যা আসে এবং চলে যায়। আরেকজন এই ব্যথাকে মৃদু বৈদ্যুতিক শকের সাথে তুলনা করেছেন। তিনি বলেন, এটা আমার বাম স্তন থেকে প্রবাহিত হয়ে ডান স্তনবৃন্তে যাচ্ছে বলে মনে হয়।
২। স্তনে চুলকানিঃ এই লক্ষণ প্রদাহজনক স্তন ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ বলে বিবেচনা করা হয়। এটা আশ্চর্যের বিষয় যে, অনেক নারী এধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হবার পর, এটাকে চর্মরোগ বিবেচনা করে মাসের পর মাস চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে গিয়ে চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। স্তনে ফুসকুড়ি হলে তীব্র চুলকানি থেকে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। এক্ষেত্রে মলম ব্যবহার করেও কোন উপকার পাওয়া যায় না। এধরনের সমস্যায় স্তনের চামড়া আঁশযুক্ত হয়ে যায়। স্তনে টোল খায় অথবা খাঁজের সৃষ্টি হয়। স্তন কুঁচকে যায়।
৩। পিঠের উপরের দিকে, কাঁধে কিংবা ঘাড়ে ব্যথাঃ স্তন ক্যান্সারের অনেক রোগীর ক্ষেত্রে বুকে ব্যথা না করে কাঁধে কিংবা ঘাড়ে, পিঠে ব্যথা করে। এ কারণে অনেকে মেরুদন্ড বিশেষজ্ঞের কাছে গিয়ে স্বাভাবিকভাবেই ক্রনিক পিঠে ব্যথার চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। যা ফিজিক্যাল থেরাপি দিয়েও ঠিক করা যায় না।অনেক স্তন টিউমার গ্রন্থিময় টিস্যুতে বিকশিত হয়, যা বুকের গভীরে প্রসারিত হয়। এই টিউমার বড় হয়ে পাঁজরে কিংবা মেরুদন্ডে চাপের সৃষ্টি করে। ফলে এসব এলাকায় ব্যথার উদ্ভব হয়। এ থেকে পরবর্তীকালে দ্বিতীয় পর্যায়ের হাড়ের ক্যান্সার হতে পারে।
Comments
Post a Comment