খেজুরের উপকারিতা: নিয়মিত খেজুর খাওয়ার উপকারিতা, খেজুর খান সুস্থ থাকুন -
সাধারণত বলা হয়ে থাকে, বছরে যতগুলো দিন আছে, খেজুরে তার চেয়ে বেশি গুণ আছে। সাধারণত প্রতি ১০০ গ্রাম পরিস্কার ও তাজা খেজুর ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি রয়েছে যা থেকে ২৩০ ক্যালরী শক্তি উৎপাদন করে, ৭৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ২.৫ গ্রাম প্রোটিন এবং ০.৪ গ্রাম ফ্যাট। গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ছাড়াও মেলে অত্যাবশ্যক ভিটামিন উপাদান। এ ছাড়াও মেলে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যামাইনো অ্যাসিড। খেজুরে স্বল্প পরিমাণে পানি থাকে যা কিনা শুকানো অবস্থায় তেমন প্রভাব ফেলে না।সাধারণত পাকা খেজুরে প্রায় ৮০শতাংশ চিনিজাতীয় উপাদান রয়েছে। বাদ-বাকী অংশে খনিজ সমৃদ্ধ বোরন, কোবাল্ট, ম্যাঙ্গানিজ, সেলেনিয়াম ফ্লুরিন, ম্যাগনেসিয়াম, এবং জিঙ্কের ন্যায় গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য উপাদান রয়েছে।
১) মস্তিষ্ক সচল রাখেঃ খেজুরের সব থেকে বড় একটা সুবিধা হল খেজুর মস্তিষ্ককে প্রাণবন্ত রাখে। আমাদের ক্লান্ত শরীরে যথেষ্ট পরিমাণ শক্তির যোগান দিতে সক্ষম এই খেজুর।
২) গ্লুকোজের অভাব রোধেঃ সাধারণত রমজান মাসে সারাদিন রোজা রাখার পর পেট খালি থাকে বলে শরীরে গ্লুকোজের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। খেজুর সেটা দ্রুত পূরণ করতে সাহায্য করে।
৩) কোষ্ঠকাঠিন্য রোধেঃ তুলনামূলকভাবে যেসব খেজুর একটু শক্ত সেইসব খেজুরকে পানিতে ভিজিয়ে (সারা রাত) সেই পানি খালি পেটে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য অনেকাংশে দূর হয়।
৪) গর্ভবতী মায়ের খাবারঃ সাধারণত যেসব মায়েরা গর্ভবতী বা ৭/৮ মাস সময় থেকে গর্ভবতী মায়েদের জন্য খেজুর একটি উৎকৃষ্ট খাদ্য। সাধারণত এই সময়টা গর্ভবতী মায়েদের শরীরে অনেক দুর্বলতা কাজ করে। তখন খেজুর মায়েদের শরীরের এই দুর্বলতা কাটাতে অনেক সাহায্য করে থাকে এবং ডেলিভারীর পর মায়েদের শরীর থেকে অতিরিক্ত রক্তপাত বন্ধ করতে ও খেজুর সহায়ক ভূমিকা পালন করে এবং বাচ্চা প্রসবের পরবর্তী সময়ে শিশুর প্রয়োজনীয় পুষ্টির জন্য মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধিতে খেজুর কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
৫) শক্তিদায়ক খাবার: খেজুরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালরি থাকে বিধায় যারা একটু দূর্বল স্বাস্থ্যের অধিকারী, সামান্য পরিশ্রমে হয়রান হয়ে যায় তাদের জন্য খেজুর নিয়মিত একটা খাবার বললেই চলে। কেননা খেজুর নিয়মিত খেলে আপনার শরীর ও মন দুটাই ভাল থাকবে।
৬) ক্যান্সার রোধেঃ আমাদের পেটের ভেতরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্যানসারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে খেজুর। এছাড়াও আমাদের মুখগহ্বরের ক্যান্সার রোধেও এই ফল বেশ কার্যকরী।
নিয়মিত খেজুর খান সুস্থ্য থাকুন । খেজুরের ঔষধী গুনাগুণ
৭) হার্টের সমস্যা রোধেঃ বিশেষ করে যাদের হার্টের সমস্যা আছে তাদের জন্য খেজুর খুবই উপকারী। কেননা খেজুর দুর্বল হার্টকে মজবুত করতে সক্ষম। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেজুর ব্লেন্ড করা জুস খেলে হার্টের সমস্যায় ভুক্তভোগী ব্যক্তি কিছু দিনের মধ্যে ভাল সমাধান পাবেন।
৮) বদহজম রোধেঃ আমাদের মুখের লালাকে ভালোভাবে খাবারের সঙ্গে মিশতে সাহায্য করে খেজুর। ফলে আমাদের বদহজম অনেকাংশে দূর হয়। হৃদরোগ কমাতেও খেজুর বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।
৯) দুর্বলাত রোধে: আমাদের দেহ ও মনকে সচল ও কার্যক্ষম রাখতে শক্তির প্রয়োজন। এর অভাবে আমাদের দৈহিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়,শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে এবং আমাদের মানসিক অবসাদ সৃষ্টি হয়ে থাকে। এসব ক্ষেত্রে শর্করা জাতীয় খাদ্য শক্তির উৎস হিসেবে বিশেষ কাজ করে।আর এই খেজুর শর্করা জাতীয় খাদ্য হিসেবে খাদ্য শক্তির উল্লেখযোগ্য উৎস হিসেবে কাজ করে।
১০) শরীরের ব্যাধি রোধেঃ খেজুরের মধ্যে থাকা প্রয়োজনীয় পরিমাণে উচ্চমাত্রার শর্করা, ক্যালরি ও ফ্যাট সম্পন্ন খেজুর সাধারণত জ্বর, মূত্রথলির ইনফেকশন, যৌনরোগ, গনোরিয়া, কণ্ঠনালির ব্যথা বা ঠান্ডাজনিত সমস্যা, শ্বাসকষ্ট প্রতিরোধে বেশ কার্যকরী।
১১) অঙ্গক্ষয় প্রতিরোধেঃ সাধারণত যারা নেশাগ্রস্ত তাদের অঙ্গক্ষয় প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করে খেজুর। আপনার স্বাস্থ্য ভালো করতে চাইলে বাড়িতে তৈরী ঘিয়ে ভাজা খেজুর ভাতের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে করে আপনার মুখের রুচি দিগুণ বৃদ্ধি পাবে। খাবারের প্রতি আগ্রহ বাড়াবে।
১২) প্রয়োজনীয় উপাদানঃ খেজুরের মধ্যে প্রয়োজনীয় পরিমাণে তেল, ক্যালসিয়াম, সালফার, আইরন, পটাসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজ, কপার এবং ম্যাগনেসিয়াম বিদ্যমান যা সুস্বাস্থের জন্য অতি দরকারি।
১৩) হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখতেঃ আমাদের সুস্থ হৃদপিন্ডে দেহযন্ত্রে স্বাচ্ছন্দ এবং সতেজ বিধান করে এমন শক্তিদায়ক বা বলবর্ধক ঔষধ হিসেবে খেজুরের জুড়ি নেই বললেই চলে।
খেজুরের ঔষধি গুনাবলী
Comments
Post a Comment